নিউজ ডেস্ক : ২০১২ সালের এই দিনে নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন গার্মেন্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১১৭ শ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা যান। হতাহত হন বহু শ্রমিক। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও হৃদয়বিদারক এই ঘটনা ভুলতে পারেননি নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবার। নিহত শ্রমিকদের পরিবার বয়ে বেড়াচ্ছে স্বজন হারানোর বেদনা। আর দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণ শ্রমিকদের নিয়ে নিদারুণ কষ্টে আছে তাদের পরিবার।
তাজরীন ট্র্যাজেডির পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকালে হতাহত শ্রমিকদের স্বজনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাজরীন গার্মেন্ট কারখানার ফটকের সামনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাজরীন গার্মেন্টের সামনে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
শ্রমিক নেতারা তাজরীন গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ এর মালিক দেলোয়ার হোসেনের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তাজরীন গার্মেন্টের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, তাজরীন ট্র্যাজেডির পাঁচ বছর পূর্তিতে বিবৃতি দিয়েছেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার।
বিবৃতিতে শ্রমিক নেতারা তাজরীনের ঘটনার বিচারের দীর্ঘসূত্রতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলেন, ১৯৯০ সালে সারাকা গার্মেন্টে আগুনে পুড়ে শ্রমিক নিহতের ঘটনা থেকে সাম্প্রতিক মাল্টিফ্যাবস কারখানায় শ্রমিক নিহত হওয়া পর্যন্ত কোনো হত্যাকাণ্ডেরই বিচার আলোর মুখ দেখেনি। ফলে বিচারহীনতার সুযোগে একের পর এক শ্রমিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। মালিকদের মুনাফার লোভের কারণে শ্রমিকরা কখনো আগুনে পুড়ে, কখনো ভবনচাপা পড়ে নির্মম মৃত্যুর শিকার হচ্ছে।
বিবৃতিতে শ্রমিক নেতারা আরো বলেন, তাজরীন হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পর অভিযোগপত্র গঠন হয়। গত দুই বছরে ১৯টি শুনানির তারিখ নির্ধারিত হলেও রাষ্ট্রপক্ষ এ সময়ে মাত্র তিনজন সাক্ষীকে হাজির করেছে। ফলে ১০৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ কবে শেষ হবে, তা আজ বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।